আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো খাদ্য মেলা রচনা |খাদ্য মেলা রচনা রচনা Class 6, 7, 8, 9, 10। ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের খাদ্য মেলা রচনা |
খাদ্য মেলা রচনা
ভূমিকা: মেলা শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে আনন্দের অনুভূতি জাগে। আক্ষরিক অর্থে মেলা শব্দের অর্থ ‘সভা’। মেলায় পরিচিতদের সাথে দেখা ও মত বিনিময়। মেলায় একটির সঙ্গে আরেকটি যুক্ত হয়। আমাদের সংস্কৃতিতে মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। মেলার ধারা। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশে মেলার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু তখন নির্দিষ্ট স্থানে এবং বৃহৎ পরিসরে মেলার আয়োজন করা হয়। বর্তমানে দেশের প্রায় সব জায়গায় মেলা বসে। তাদের মধ্যে কিছু খুব বড় এবং কিছু ছোট। তবে মেলার আনন্দ এখনো আগের মতোই আছে।
আরও দেখতে পারেন: শীতের মেলা রচনা
মেলার উপলক্ষ: আমাদের দেশে বেশিরভাগ মেলাই বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে বসে। হিন্দুদের দূর্গা পূজা, রথযাত্রা, দোল উৎসব, জন্মাষ্টমী ইত্যাদি উপলক্ষে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মুসলমানদের জন্য মহরমের ১০ তারিখের দিকে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে মেলাও বসে। এছাড়া চৈত্রসংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষে মেলা বসে। আমার দেখা মেলার উপলক্ষ পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ।
মেলার স্থান: সাধারণত বড় খোলা জায়গায় মেলা বসে, যেখানে মানুষের আনাগোনা থাকে। অনেক সময় স্কুলের মাঠেও মেলা বসে। কিন্তু মেলা দেখলাম নদীর ধারে একটা বড় বটগাছের নিচে বসে।
মেলার প্রস্তুতি: পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালির সবচেয়ে আনন্দের দিন। এদিন উপলক্ষে মেলার প্রস্তুতি ছিল ব্যাপক। বটগাছের আশেপাশে অস্থায়ীভাবে দোকানপাট গড়ে উঠেছে। একদিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা হয়েছে বড় মঞ্চ। কিছু লোক মূল জায়গায় স্থান দেয় না। তাদের জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তার পাশে বসার জন্য প্রস্তুত হন। মঞ্চের চারপাশে মাইক্রোফোন রাখা হয়েছে।
আরও দেখতে পারেন: গ্রীষ্মের দুপুর রচনা
মেলার চিত্র: পহেলা বৈশাখ বা নববর্ষের শুরুতে মেলা শুরু হয়। মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মেলা শুরু হলেই ভিড় বেড়ে যায়। গতকাল পর্যন্ত যে দোকানগুলো খালি ছিল সেগুলো এখন বিভিন্ন পণ্যে ভরা। মানুষ রঙিন পোশাক পরে মেলায় প্রবেশ করে। ছোট বাচ্চাদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক দেখা যায়। বৃদ্ধরাও ভিড় এড়িয়ে মেলায় প্রবেশ করতে শুরু করেন। মেলাকে ঘিরে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রতিটি দোকানে লোকেরা তাদের পছন্দের এবং প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি কিনতে শুরু করে। ছোট বাচ্চারা মাটির খেলনা, বেলুন, বাসি এবং আরও অনেক কিছু বিক্রি করে দোকানে ভিড় করে। মহিলারা গয়না এবং চুড়ির দোকানে ভিড় করেন। এ ছাড়া কাপড়ের দোকানেও ভিড় লক্ষ্য করা যায়। পুরুষরা তাদের পতিতালয়ের সামনে ভিড় করে। মেলার পাশেই দেখা যায় মিষ্টির দোকান। সবাই গরম জেলি কিনতে এখানে ছুটে আসে। এছাড়াও মেলায় চেলাভাজা, বাদামভাজা, পাপ্পারভাজা, ভুট্টা, কনক চালের ঝাল, মুড়কি, বাতাসা, হাওয়াইয়ান মিষ্টিসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি পাওয়া যায়। সবাই মেলায় ঘুরে বেড়ায় সেগুলো খেয়ে। মেলার একপাশে একজন মানুষ সাপ নিয়ে খেলা করছে। দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। এছাড়া একটি ছোট সার্কাসেরও আয়োজন করা হয়।
আরও দেখতে পারেন: বর্ষাকাল রচনা
মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: মেলায় সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় শিল্পীদের গান পরিবেশনের পর শোভাযাত্রা শুরু হয়। মঞ্চে পারফর্ম করার পালা ছিল ভেলুয়া সুন্দরীর। যাত্রায় ভেলুয়া সুন্দরীর জীবনের দুর্দশা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই। পরিশেষে সবাইকে ধন্যবাদ। কর্তৃপক্ষ মেলা শেষ করে।
মেলার তাৎপর্য: মেলায় মানুষের সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি হয়। মেলায় স্থানীয়ভাবে তৈরি পণ্যের প্রদর্শনী হয়। মেলায় এসে মানুষ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে। শুধু তাই নয়, এখানে অর্থনৈতিক বিষয়ও জড়িত। মেলা কিছু মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। এ ছাড়া ক্রেতারাও তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে মেলার ওপর নির্ভরশীল। মেলাকে ঘিরে বছরের বড় পরিকল্পনাও করেন অনেকে।
আরও দেখতে পারেন: অলস দুপুর রচনা
উপসংহার: মেলা বাঙালি সংস্কৃতির একটি বড় অংশ গঠন করে। মেলা কোনো সাধারণ অনুষ্ঠান নয়। এর সঙ্গে আমাদের প্রথা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য জড়িত। মেলার মাধ্যমে গড়ে উঠেছে এক শ্রেণীর জীবন-জীবিকা। মেলা শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও আনন্দের উৎস। তাই মেলার দিন মানুষ বাড়ি থেকে বের হয়। আনন্দের প্রয়োজনে মানুষকে একত্রিত করতে মেলার বিকল্প নেই। তাই আজ মেলাটি আমাদের কাছে এত আকর্ষণীয়।
শেষকথা
শিক্ষার্থীরা আজকে আমরা জানলাম তোমার দেখা খাদ্য মেলা রচনা। যদি আজকের এই খাদ্য মেলা রচনা টি ভালো লাগে তাহলে এখনি ফেসবুকে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন আর এই রকমই নিত্যনতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।